প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পাহাড় কন্যা খাগড়াছড়ি। পাহাড়, ঝর্ণা ও বহমান পাহাড়ি নদীর সৌন্দর্য প্রকৃতির সাজ ভারত সীমান্তবর্তী খাগড়াছড়ি জেলাকে অন্যান্য এলাকা হতে দিয়েছে আলাদা মর্যাদা। নানা ধর্ম, বর্ণ ও জাতীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনের জনপদ খাগড়াছড়ি। কল কারখানা হীন জেলার কৃষিই একমাত্র সিংহ ভাগে মানুষের আয়ের উৎস। তারমধ্যে মাছ চাষ অন্যতম।
সম্প্রতি টানা বর্ষণ ও ভারত থেতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে খাগড়াছড়ির নিম্মাঞ্চল। এতে ভেসে গেছে মাছের পুকুর। নি:স্ব হয়েছেন অনেক মৎস্যজীবী। ভেঙে গেছে কাঁচা ঘরবাড়ি। গৃহহীন হয়েছে অনেক পরিবার।
খাগড়াছড়ি মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় নয়টি উপজেলায় ৪৫০০ পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে। তারমধ্যে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে ১৫৬৯টি পুকুর। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৯ কোটি টাকা। জেলার সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মাটিরাঙ্গা উপজেলায়। যার পরিমাণ প্রায় ৫৭০টি পুকুরে ১৩৭৬.৬০ লাখ টাকা।
মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি এলাকার মৎস্য চাষি জাকির হোসেন জানান, তার এক মাত্র আয়ে উৎস মাছ চাষ। মাছ চাষ করেই তার চার সদস্যের সংসার চলে। তিনি নিজের দুটি পুকুর এবং লিজ নিয়ে আরো দুটিসহ মোট চারটি পুকুরে মাচ চাষ করেছিলেন। সব কয়টি পুকুর ঢলে ভেসে গেছে। এতে তার প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এখন তার চলার মত কোনো অবলম্বন নেই। এমতাবস্থায় মৎস্য অধিদফতরের সহযোগিতা করেন তিনি।
আরেক মৎস্যজীবী হায়দার আলী জানান, ১৬ একর জমির ওপর ১৯টি পুকুরে মাছ চাষ করেছেন। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আটটি পুকুর প্লাবিত হয়েছে। এতে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। পুকুরের পাড় ভেঙে গেছে। তার এমন ক্ষতি পূরনীয় নয়। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন আশা করেন তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. রাজু আহাম্মদ জানান, এরই মধ্যে জেলার মৎস্যজীবীদের ক্ষতি নিরুপণ করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।